আপনাদের কোন কিছুর সম্পর্কে জানতে চােইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

 ইচ্ছাশক্তি মানুষের অন্যতম চালিকা শক্তি। ইচ্ছাশক্তি অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলে। "ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়" নিচে দেওয়া হল।



ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়


মূলভাবঃ  ইচ্ছা শক্তির জোরে মানুষ অনেক অসাধ্য সাধন করতে পারে। ইচ্ছাশক্তি মানুষকে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। এটা ইচ্ছাশক্তি যা একজন মানুষকে বারবার পরাজয়ের পর উঠে দাঁড়ায়, জয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায়।

সম্প্রসারিত ভাব: জীবনে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের সঠিক পথে চলতে হবে। এই পৃথিবীতে কিছুই অর্জন করা সহজ নয়। নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। পথের সব বাধা অতিক্রম করতে কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। কিন্তু একা পরিশ্রমই আমাদের সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। কারণ পরিশ্রম করার পরও ব্যর্থতার সম্ভাবনা থাকে। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি আরেকটি গুণ যা আমাদের খুব প্রয়োজন তা হল ইচ্ছাশক্তি। ইচ্ছাশক্তি বলেই একজন মানুষ পরাজয়ের পর আবার উঠে দাঁড়ায়। ইচ্ছাশক্তি মানুষের মনে একাগ্রতা, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের মতো গুণাবলী দ্বারা গঠিত।

যদি কারও জীবনের লক্ষ্য এভারেস্টের মতো বড় হয় তবে প্রথমবার সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। পরাজয়ের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াই মানুষকে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে আসে। ছোট-বড়, ছোট-বড় যেকোনো কাজে মানুষের সাফল্যের পেছনে রয়েছে বিশাল ইচ্ছাশক্তি। ইচ্ছাশক্তির কারণেই মানুষ অসাধ্য সাধন করতে পারে। মানুষের প্রবল ইচ্ছা ও কৌতূহলের কারণেই আজ মানুষ গভীর সমুদ্রের তলদেশ থেকে অসীম আকাশের গ্রহ-উপগ্রহে তাদের পায়ের ছাপ রেখে যেতে পেরেছে। ইচ্ছাশক্তির কারণে মানুষ সম্ভাবনার নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে। ইচ্ছাশক্তি মানুষকে নতুন কিছু করতে, অজানাকে অন্বেষণ করতে অনুপ্রাণিত করে। ইচ্ছাশক্তি মানুষকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়তে সক্ষম করে। ভাগ্য নিজেই হঠাৎ করে কোনো ব্যক্তি বা জাতির জীবনে চলে আসে না। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টা। তবেই মানুষ তার জীবনে সৌভাগ্য দেখতে পাবে, তার জীবন হবে মহিমান্বিত ও সৌন্দর্যে ভরপুর। উদাহরণ স্বরূপ আমরা বিভিন্ন চিন্তাবিদদের জীবনী বিশ্লেষণ করতে পারি। ইচ্ছাশক্তির জোরে নেপোলিয়ন সমগ্র ইউরোপ জয় করতে সক্ষম হন। কলম্বাস তার ইচ্ছাশক্তির কারণে আজকের বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ আমেরিকা আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন। বাংলাকে মাতৃভাষা, জাতীয় ভাষা করার আকাঙ্ক্ষাই হাজার হাজার ভাষা সৈনিককে অনুপ্রাণিত করেছিল ১৯৫২ সালে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা ভাষা আন্দোলনে বিজয়ী হয়ে বাংলাকে আমাদের জাতীয় ভাষা হিসেবে পেয়েছি। ইচ্ছাশক্তি বলেই বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক কালজয়ী রচনা লিখেছেন। ইচ্ছাশক্তির কারণেই মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খনি থেকে আকরিক সংগ্রহ করে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অগ্রসর হয়।


আরো জানুন :


একমাত্র ইচ্ছাশক্তিই পারে একজন মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলতে। ইচ্ছাশক্তি মানুষকে অসীম সাহসী হতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দৃঢ়-ইচ্ছা, পরিশ্রমী এবং আত্মবিশ্বাসী হওয়া। এই সমস্ত গুণাবলী একজন মানুষকে তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কঠিন দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। জীবনের সকল বিপর্যয় ও প্রতিবন্ধকতাকে সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে অনুপ্রাণিত করা। তাই তো বলা হয়, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। যে ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তি নেই, সে নতুন কোনো কাজের অনুপ্রেরণা পায় না। ফলে জীবনযুদ্ধে সে পিছিয়ে পড়ে। দুর্বল ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়। দুর্বল ইচ্ছাশক্তি তার অগ্রগতির প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ইচ্ছাশক্তির অভাবে সে অক্লান্ত শ্রম সাধনার প্রেরণা পায় না। যা নিজের মধ্যে কাজের প্রতি ঘৃণা ও অলসতা তৈরি করে। আমরা জানি, জীবিকা অর্জনের জন্য মানুষকে তাদের ব্যক্তিগত মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু যে মানুষটির কাজ করার ইচ্ছা নেই, তার অলসতা ও নিষ্ক্রিয়তা তাকে অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের চাহিদা পূরণের মহৎ পথ থেকে বিচ্যুত করে। অনেক ক্ষেত্রে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান না আসায় ব্যর্থতা ও হতাশার কালো রাত নেমে আসে। জীবনে অর্থ, জ্ঞান, সাফল্য, প্রতিপত্তি অর্জনের জন্য জীবনের কঠিন যুদ্ধে প্রবেশ করতে হয় এবং সেই যুদ্ধে একজন সাহসী বিজয়ী সৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হয়। কিন্তু ইচ্ছাশক্তির অভাবে অনেকেরই কাজের প্রতি বিতৃষ্ণা দেখা দেয় যা জীবনের সাফল্যের সোনালী দরজায় পৌঁছানোর রাস্তাকে কণ্টকাকীর্ণ করে তোলে। আসলে তাকে জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া সৈনিকের মতো বাঁচতে হয়।


মন্তব্য: ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমেই মানুষ তার জীবনে সাফল্যের উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে। কাজে ইচ্ছাশক্তি যত প্রবল, সফল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। তাই ব্যক্তিজীবন ও জাতীয় জীবনে দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সকল কাজে অগ্রসর হওয়া উচিত।

Post a Comment

أحدث أقدم